
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ উপজেলার ভুলতা গাউছিয়া এলাকায় পরিবহন চাঁদাবাজিতে এখনো সক্রিয় পতিত আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন ভুলতা ইউনিয়ন শ্রমিকলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুম।ভুলতা-গাউছিয়া থেকে কুড়িল বিশ্বরোড এলাকায় চলাচলকারী বিভিন্ন প্রাইভেটকার থেকে নানা অজুহাতে পুলিশ ও প্রশাসনের নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি করে চলেছে মাসুম। ভুলতা গাউছিয়া থেকে কুড়িল বিশ্বরোড পর্যন্ত চলাচলকারী অন্ততপক্ষে দেড় শতাধিক প্রাইভেটকার থেকে দুইটি স্পটে ১৫০০ টাকা ও ৫০০ টাকা হারে গাড়ি প্রতি আদায় করে থাকে মাসুমের নেতৃত্বে একটি চাঁদাবাজ চক্র। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ চাঁদার টাকা আদায় হয় কুড়িল বিশ্বরোড এলাকায়, বাকি টাকা আদায় হয় কাঞ্চন টোল প্লাজার সামনে ট্রাফিক পুলিশের রেকার অপারেটর নাজমুলের মাধ্যমে। বর্তমানে রূপগঞ্জ উপজেলার নারায়ণগঞ্জ ১ আসনের বিএনপি দলীয় প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু চাঁদাবাজির বিষয়ে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করায় বিএনপির কোন নেতা কর্মীরা মাঠ পর্যায়ে চাঁদাবাজিতে নেই। সেই সুযোগে পরিবহন খাত থেকে বিরামহীন ভাবে চাঁদার টাকা আদায় করছে আওয়ামী লীগের এসব অপরাধীরা। প্রতিমাসে অন্ততপক্ষে তিন লক্ষ টাকা চাঁদা উঠছে ভুলতা গাউছিয়া থেকে কুড়িল বিশ্বরোডগামী প্রাইভেটকার থেকে। এর মধ্যে সামান্য কিছু টাকা পুলিশের কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের দিয়ে বিরাট একটি অংশ ভোগ করছে চাঁদাবাজ মাসুম।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক প্রাইভেট কারের চালক জানান মাসুম এবং বাদল নামের দুই ব্যক্তি আমাদের কাছ থেকে পুলিশ পেমেন্টের নাম করে প্রতি মাসে এই চাঁদার টাকা আদায় করছে, টাকা না দিলে আমাদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হয়, গাড়ি ডাম্পিং এবং থানায় নিয়ে প্রাইভেট কার গুলো জব্দ করা হয়ে থাকে।
ভুলতা গাউছিয়া একটি বাণিজ্যিক এলাকা, সারাদেশ থেকে লোকজন পাইকারি কাপড় থ্রি পিস কিনতে এখানে আসেন, যার কারনে এখানকার এসব প্রাইভেট কারে যাত্রী চলাচলের চাহিদা অনেক বেশি। বেশিরভাগ প্রাইভেট কার গুলোর কাগজপত্র হালনাগাদ করা নেই। কোন কোন গাড়ির ফিটনেস নেই। রুটি রুজির প্রয়োজনে দেড় শতাধিক পরিবার এইসব গাড়ি চালিয়ে তাদের জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। চাঁদাবাজির কারণে চালকদের পরিবার পরিজন নিয়ে চলতে কষ্ট হয় বলেও জানান অনেকে।
এই বিষয়ে কথা বললে ভুলতা হাইওয়ে ক্যাম্পের অফিসার ইনচার্জ জসিম উদ্দিন বলেন, মাত্র ১৩ দিন আগে আমি এই স্টেশনে যোগদান করেছি, চাঁদাবাজির বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নই, এলাকায় ফুটপাত, পরিবহনের বিশৃঙ্খলা, অটো রিক্সার বেপরোয়া চলাচল বন্ধে কাজ শুরু করেছি,চাঁদাবাজির বিষয় তথ্য পেলে অবশ্যই অভিযুক্তদের আইনের আওতায় আনা হবে।
স্থানীয় বিএনপি’র একজন মধ্যম সারির নেতা জানান, গত ৫ আগস্ট এর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার দিন থেকে কয়েক মাস চাঁদাবাজি বন্ধ ছিল। চাঁদাবাজি বন্ধ থাকায় এসব গাড়ি চালকদের ফিটনেস, লাইসেন্স, রং পার্কিং সহ নানা অজুহাত তুলে মামলা দিয়ে হয়রানি করতো পুলিশ। এর কয়েক মাস পরেই শ্রমিকলীগ নেতা মাসুমের মাধ্যমে এ সকল প্রাইভেট কারগুলো চাঁদার মাধ্যমে এইরূটে বিনা বাধায় চলাচল করছে।
তবে সাধারণ মানুষের অভিমত আওয়ামী লীগ সরকার দেশ থেকে বিতাড়িত হলেও রূপগঞ্জ উপজেলার ভুলতা গাউছিয়া থেকে চলাচলকারী প্রাইভেট কার গুলো থেকে শ্রমিকলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুম কিভাবে চাঁদাবাজি করছে সেই বিষয়টি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নজরদারির প্রয়োজন।
প্রাইভেট কার চালকরা চাঁদাবাজ মাসুম কে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবিও জানান।